দেশ গেল দেশ গেল বলে কত নিতাই চিৎকার পাড়ে

কথা: সিদ্দিক মোল্লা

দেশ গেল দেশ গেল বলে কত নিতাই চিৎকার পাড়ে
ওই নিতাই সংসদে যাইয়া নিজে নিজের ঝুলি ভরে
দেশ গেল দেশ বলে কত নিতাই চিৎকার পাড়ে
হাইরে সোনার বাংলাদেশে গরীব কেন না খাইয়া মরে
ন্যায্য কথা কইলে পরে ধনীর মাথা গরম করে
দেশ গেল দেশ গেল বলে কত নিতাই চিৎকার পাড়ে
গরীব দুঃখীর ভোটটা নিয়া মন্ত্রী মিনিস্টার হয়া
এখন দেখি বুক ফুলাইয়া লম্বা লম্বা কথা বলে
বৃটিশ যায় পাকিস্তান এলো ভাগ্য বদল না হইলো
স্বাধীনতা চল্লিশ বছর গরীব কিছু পাইলো নারে
দেশ গেল দেশ গেল বলে কত নিতাই চিৎকার পাড়ে
পাগল সিদ্দিক ভেবে বলে জোট বাঁধো ভাই দলে দলে
কৃষক শ্রমিক ছাত্র মিলে সাম্য শান্তি আনতে হবে
দেশ গেল দেশ গেল বলে কত নিতাই চিৎকার পাড়ে।

ওরা লম্বা লম্বা কথা বলে নিজের স্বার্থ ছাড়ে না

কথা: সিদ্দিক মোল্লা

ওরা লম্বা লম্বা কথা বলে নিজের স্বার্থ ছাড়ে না
ওদের পিছে ঘুরলে মোদের মুক্তি হবে না।
ওরা রাতে করে কালো বাজারী দিনে গরীবের কথা বলে
তবু আমরা সবাই ওদের পিছে যাই ছুটে দলে দলে
আমরা রক্ত দিয়ে ওদের বাঁচায় ওরা সেটাও মনে রাখে না।
ওদের পিছে ঘুরলে মোদের মুক্তি হবে না।
ওদের উপর দিয়ে ভীষণ ফিটফাট দেখতে লাগে যেন চমৎকার
কিন্তু ভেতর দিয়ে হয় সদরঘাট দুঃখ কষ্ট হাহাকার
এই সব রংচং দেখে ভূলে গেলে দুঃখ মোদের যাবে না
ওদের পিছে ঘুরলে মোদের মুক্তি হবে না।
এবার নিজের পায়ে দাঁড়াও সবে
তাতে পাওটা তোমার শক্ত হবে
এই সমাজ নামের নৌকটারে ঠিক পথে চালাতে হবে
নৌকোর হাল থাকিলে ওদের হাতে
সে নৌকো তোমার কথায় চলবে না
ওদের পিছে ঘুরলে মোদের মুক্তি হবে না।

“আমরা পার্টিতে এসেছিলাম গান করার জন্য নয়, বিপ্লব করার জন্য” -হেমাঙ্গ বিশ্বাস :জাকির তালুকদার

রেললাইনের পূর্ব পাশে বিহারি-কালোনির পরের চত্বরেই শেকলঘেরা কুড়িফুট উঁচু শিবলিঙ্গের সদৃশ সাদা চুনকাম করা সিমেন্টের গায়ে আলকাতরা-কালো কালিতে ‘ঈমান-একতা-শৃঙ্খলা’ লেখা জিন্নাস্মারক থেকে শুরু হয়ে মোটামুটি সরলরেখার মতো আয়ুব খানের উন্নয়ন-দশকে বানানো ষাটফুটি সড়কটিই আমাদের লোকালয়ের রাজপথ। এলোপাথারি গড়ে ওঠা জমাটি রিক্সাস্ট্যান্ড আর একঘোড়ার প্রায় উচ্ছন্নের পথে যাওয়া টমটমস্ট্যান্ডের সামনে-পেছনে ভাতের হোটেল, হোলসেল ওষুধের দোকানগুলোর সারি, জুটমিলের পাটক্রয়কেন্দ্র, মারোয়াড়িদের ডাল-খোল-ভূষির গুদাম এবং গদি দেখতে দেখতে পূর্ব দিকে এগিয়ে চলে সড়ক। তারপর জেলার সবচেয়ে বড় কলেজ, টুকটাক কিছু অফিস-দোকান, আর নোয়াখালিপাড়ার কসাইদের গোস্তের দোকান দেখা পাওয়া যায় শহরের প্রাণকেন্দ্রের সিনেমা হলের আগপর্যন্ত। তারপরেই বাসস্ট্যান্ড পেরুলেই আবার ফাঁকা ফাঁকা কয়েকটা দালানকোঠা ছাড়া মাদ্রাসা মোড়ের আগে আর জমজমাট কোনো জনসমাবেশ পাওয়া যাবে না। ঢাকার বিক্রমপুর আর কুমিল্লা থেকে আসা বাস্তুহারাদের পাড়া কাছেই বলে মাদ্রাসা মোড়কে আমাদের শহরের আদি বাসিন্দারা কেউ কেউ তাচ্ছিল্যের সাথে ডাকে ঢাকাইয়া মোড় বলে। তো এই পর্যন্ত এসেই নিজের বিস্তারের দৈর্ঘ্যরে সমাপ্তি ঘোষণা করেছে আমাদের আড়াই কিলোমিটারের ছোট্ট রাজপথ। সেই রাজপথ দখলের সংগ্রামে সম্মুখ সারিতে দেখেছি আমাদের জনপদের সবচেয়ে মেধাবী তরুণদের, উজ্জ্বল যুবাদের আর জনপদে সবচেয়ে সৎ এবং প্রাজ্ঞ বলে পরিচিত বয়স্কদের। হতাশার নব্বই দশকের আগ পর্যন্ত তাদের দখলেই ছিল আমাদের রাজপথ। আর সেই রাজপথ দখলের সংগ্রামে যেসব হাতিয়ার ছিল তাদের হাতে, সেগুলির মধ্যে হেমাঙ্গ বিশ্বাসের গানগুলি ছিল একাগ্নি বানের মতোই অন্যতম প্রধান আয়ুধ। Continue reading “আমরা পার্টিতে এসেছিলাম গান করার জন্য নয়, বিপ্লব করার জন্য” -হেমাঙ্গ বিশ্বাস :জাকির তালুকদার

আমরা পিরিত করি কার সাথে (ও ভাই)

কথা: সিদ্দিক মোল্লা

আমরা পিরিত করি কার সাথে (ও ভাই)
যে খায় আমার রক্ত চুষে প্রেম চলে কি তার সাথে
আমরা পিরিত করি কার সাথে।
বাদুরে সুপরি খায় চুষিয়া চুষিয়া
ধনীরা গরীবদের খায় তেমনই চুষিয়া (২)
ধনী গরীব এই ব্যবধান দেখতে পায় সমাজেতে
আমরা পিরিত করি কার সাথে।
মানুষে মুরগী পোষে যতনো করিয়া
অবশেষে খাই তারে জবাইও করিয়া
ধনীরা তেমনি খায় দেখতে পাই এই জগতে
আমরা পিরিত করি কার সাথে।
পাগল সিদ্দিক ভেবে বলে গরীব দুঃখী ভাই
এই রক্ত চুষার সমাজ ভেঙ্গে শান্তির সমাজ চাই
এবার গরীব দুঃখী সবাই মিলে জোট বাঁধ ভাই এক সাথে
আমরা পিরিত করি কার সাথে
যে খায় আমার রক্ত চুষে প্রেম চলে কি তার সাথে
আমরা পিরিত করি কার সাথে।

এই সমাজটা চোরের হাট বাজার

কথা: সিদ্দিক মোল্লা

এই সমাজটা চোরের হাট বাজার
ঘটি চুরি বাটি চুরি চোরের নাইকো ভেদ বিচার
এই সমাজটা চোরের হাট বাজার।
তেল চুরি, গ্যাস চুরি, বিদ্যুৎ চুরি ভাই
শেয়ার বাজার করে চুরি হিসাব কিতাব নাই
চোরে চোরে খালাত ভাই গরীব দুঃখীর হাহাকার
এই সমাজটা চোরের হাট বাজার।
খিলাপতি করে চুরি কোটি টাকা নিয়া
কেউ তাদের বলে না কিছু হাসিয়া হাসিয়া
কিন্তু গরীব দুঃখী লোন তুলিলে ঘর বাড়ি থাকে না তার
এই সমাজটা চোরের হাট বাজার।
পাগল সিদ্দিক ভেবে বলে গরবি দুঃখী ভাই
এই চোরের সমাজ ভেঙ্গে দিয়ে শান্তির সমাজ চাই
কৃষক শ্রমিক এক হইয়া সমাজটা গড়বো এবার
এই সমাজটা চোরের হাট বাজার।
ঘটি চুরি বাটি চুরি চোরের নাইকো ভেদ বিচার
এই সমাজটা চোরের হাট বাজার।