গান এবং বিজ্ঞান এবং উদীচীর গান : মাধব রায়

মানব শিশু যেমন মাতৃগর্ভ থেকেই তার হৃদস্পন্দন শুরু করে দেয় এবং জন্মের পর দৈনিক এক লক্ষেরও বেশি বার, বছরে চার কোটিরও বেশিবার স্পন্দিত হয় তার হৃদয়, তেমনি তার বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ শুরু হয় মাতৃগর্ভেই। বড় হয়ে আর বুড়ো হয়ে সে বুদ্ধিজীবী হোক বা না হোক, তার বুদ্ধির শুরু মায়েই পেটেই। বৃদ্ধির বিকাশ নির্ভর করে তা মস্তিস্কের নিউরনের মানের উপর। ১৪ থেকে ১৫ কোটি নিউরনের গুণগত মৌলিক গঠন শিশুটি জন্মসূত্রেই পেয়ে থাকে। জন্মের পর তার নিউরনের গুণগত পরিবর্তন হতে থাকে প্রায় দশ বছর পর্যন্ত। সেই দশ বছর তার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তখন নিউরেনের মানের যে পরিবর্তন হয় তা তার অবস্থান বা পরিবেশ পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। নিুমানের নিউরন নিয়ে জন্মগ্রহণকারী শিশু যদি বছর খানেক অনুকূল পরিবেশে লালিত পালিত হয়, তবে তার নিউরনের মান অনেকখানি উন্নত হয়। আবার উচুমানের নিউরন নিয়ে জন্মগ্রহণকারী শিশু যদি দশ বছর পর্যন্ত প্রতিকূল পরিবেশে বড় হয়, তবে তার নিউরনের মান নিুপর্যায়ে চলে যায় এবং এরপর সাধারণত নিউরনের মানের আর উন্নয়ন হয় না। Continue reading গান এবং বিজ্ঞান এবং উদীচীর গান : মাধব রায়

শত অজানার খ-চিত্র : গোলাম মোহাম্মদ ইদু

যুগের দাবি মেটাতে রণেশ দাশগুপ্ত যুগের কর্মী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন বাংলায়। নিজের দেশকে ইংরেজদের জোয়ালমুক্ত করার আন্দোলনে সে যুগের আন্দোলকারী বিপ্লবীদের সাথে তিনিও একাত্ম হয়েছিলেন। তখন দেশকে মুক্ত করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক মুক্তি আন্দোলনের ধাক্কাও ভারতের গায়ে তখন লাগতে থাকে। কিন্তু বিপ্লবীদের একই উদ্দেশ্য ভারতকে স্বাধীন করা। এ ব্যাপারে কাজ হচ্ছিল দুটি ধারায়। একটি ধারা ছিল গান্ধিজীর অহিংস আন্দোলন, দ্বিতীয় ধারা ছিল নেতাজী সুভাষ বসুর সশস্ত্র সংগ্রাম। দ্বিতীয় ধারার এই বিপ্লবীরা আবার দুটি ধারায় বা দুটি দলে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করেন। এ দুটি দল সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে ভারতকে মুক্ত করে স্বাধীন হতে চায়। এদের একটি যুগান্তর, অন্যটি অনুশীলন দল। রণেশ দাশগুপ্ত অনুশীলন দলের হয়ে বহুদিন সশস্ত্র সংগ্রামে সক্রিয় ছিলেন। Continue reading শত অজানার খ-চিত্র : গোলাম মোহাম্মদ ইদু

রবীন্দ্রনাথকে ফিরে পাওয়ার আকাঙ্খা: গোলাম মোহাম্মদ ইদু

বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বিশ্বকবি রবীন্দ্র নাথের সার্ধশত জন্মজয়ন্তি উদযাপিত হচেছ মহাসমারোহে দু’দেশেই ভারত এবং বাংলাদেশে। আমরা বাঙালি, তাই নিজের জীবনের তাগিদেই আমরা আমাদের আসল ঠিকানা খুঁজে নিতে চেষ্টা করছি। মাঝে মাঝেই কিছু না বুঝেই আমাদের চলার পথে বাধার সৃষ্টি করে এসেছে প্রতিক্রিয়াশীল চক্র এবং ধর্মান্ধ মৌলবাদীরা। ওরা ধর্মের দোহাই দিয়ে ধর্মান্ধতার জিকির তুলে বাঙালি সত্তা থেকে আলাদা করতে চেষ্টার ত্রুটি করেনি রবীন্দ্রনাথকে। ব্যর্থ হয়েছে।
‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’ এই দেশের গানটিকে (পরবর্তীতে যা আমাদের জাতীয় সংগীত হয়ে ওঠে) বিপ্লবী গান করে তুলেছিল। এই গানটিকে গাওয়ার জন্য আমরা উতলা হয়ে উঠতাম। মুক্তিযুদ্ধের মাঠে-পাহাড়ে জঙ্গঁলে মুক্তিওযাদ্ধা ক্যাম্পে এই গানটি আমাদের জয়ী হওয়ার প্রেরণা দিত। Continue reading রবীন্দ্রনাথকে ফিরে পাওয়ার আকাঙ্খা: গোলাম মোহাম্মদ ইদু

আমার শিশু মনের তিন কবি: কাজী মোহাম্মদ শীশ

এই পরিণত বয়সেও সুকান্ত-নজরুল-রবীন্দ্রনাথ এই তিন কবিকে নিয়ে যখনই নাড়াচাড়া করি তখনই আমার শিশু মনে গেঁথে থাকা কিছু শব্দ, কিছু কথা, কিছু ছন্দ, কিছু তরঙ্গ নিরন্তর বহে চলে অন্তর জুড়ে। আমার অনুভূতিতে তোলে এমন সব ঢেউ যা ভাষায় রূপ দেওয়ার সাধ্য আমার নেই। কেমন করে কোথা থেকে শুর করবো বুঝে উঠতে পারি না। খুঁজতে চেষ্টা করি শিশু কালের সেই সময়টাকে। কখনো মনে হয় খুঁজে পেয়েছি। কখনো মনে হয় সব কিছু থেকে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। পারিবারিক কারণে কিনা জানি না পারিপার্শ্বিক প্রভাবে হয়তো বা, নতুবা তখনকার আর্থসামাজিক অবস্থা, পাড়া মহল্লার সংবদ্ধতা সবটা মিলিয়ে আরো অনেকের মতো আমাকেও বিশেষ কিছু পড়াশোনা করার আগেই এই তিন কবির সাথে পরিচয় ঘটিয়ে দিয়েছিল। তিনজনই মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল আমার শিশু মনে। দিনে দিনে এই কবির সাথে আমার বন্ধুত্বকে প্রগাঢ় করে তুলেছিল আরও কিছু কবি-গীতিকার-নাট্যকার-গায়কের কবিতা গান-নাটক। সে সব গান-কবিতা-নাটক আমার রক্তের সাথে মিশে গিয়ে মন জগতে কী এক বিস্ময়কর অনির্বচনীয় আনন্দধারা সৃষ্টি করে চলেছে অবিরত। বড় ইচ্ছে করে ছেলেবেলার সেই ছেলেমানুষির কিছুটা ভাগ বর্তমান শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে। ভাবি আমার সেই ছেলেবেলা যদি বার বার ফিরে আসতো প্রথমে মনে পড়ে গানের কথা। তখনও স্কুলে যাওয়া শুর হয় নাই। ছাপার অক্ষরে পড়ার অনেক আগেই পিন লাগানো দম দেওয়া গ্রামোফোন যন্ত্রে
‘রানার রানার’ গানটি শুনে ডাক হরকরার কঠিন-করুণ জীবনের ছবি শিশু মনে গভীর রেখাপাত করে। তখন কিন্তু এ গানের পরই আর একটি রেকর্ড অবশ্যই শুনতে হয়েছে। শুনতে হয়েছে কোন এক গাঁয়ের বধূর সরল-সুন্দর-সুখী জীবনের করুণ সমাপ্তির কথা কোন এক গাঁয়ের বধূর গানটি। কেন সুকান্তের পর সলিল চৌধুরীর গান অপরিহার্যভাবে শোনার বাসনা জেগেছে সে প্রশ্নের উত্তর খোঁজার প্রয়োজন হয় নাই। কোথায় কীভাবে রানার গানের শেষ অংশ; Continue reading আমার শিশু মনের তিন কবি: কাজী মোহাম্মদ শীশ

সংস্কৃতিই গণঐক্যের বলিষ্ঠ হাতিয়ার: কামাল লোহানী

সাংস্কতিক উত্তরাধিকারই যে আমাদের গর্ব, ইতিহাস তাই নয়, আমরাও তো চলমান ইতিহাসের নায়ক, সৃষ্টি করে চলেছি নবনব অধ্যায়, নতুন কোন শত্রু“র বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মাধ্যমে। বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের পাকিস্তানী কায়েমী স্বার্থবাদী উপনিবেশিক শত্রু“, সমান্তবাদ, সাম্প্রদায়িকতাবাদ নানা শোষকশ্রেণী ও গণবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে আমরা লড়েছি । এ লড়াইয়ে আমাদের সহযোদ্ধা ছিলেন প্রধানত: এ দেশীয় কৃষক তথা মেহনতি মানুষ এবং সচেতন নাগরিক সমাজ। রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সংগ্রামে গণমানুষের অগ্রগামী অংশই ছিলেন নিপীড়িত, নির্য্যাতিত জনগোষ্ঠী। এদেশীয় সামন্তপ্রভূরা শাসকশ্রেণীর লেজুড়বৃত্তি করে নিজেদের আখের গোছাবার লক্ষ্যে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে শোষক গোষ্ঠীর স্বার্থ সংরক্ষণের চেষ্টাই করে গেছে। ফলে ওদের ভূমিকা সব সময়ই গণবিরোধী ছিল এবং থেকেও গেছে। আর তেমনি ভারতের প্রথম স্বাধীনতা মযদ্ধ- সেই ১৮৫৭ সালে যেমন সাধারণ সিপাহীরা বিদ্রোহ করেছিলেন সাম্রাজ্যবাদী কপটতা ও সাম্প্রদায়িক ভেদবুদ্ধি প্রয়োগের বিরুদ্ধে ঐক্যের সাহসে, তেমনি দ্বিতীয় সহাযুদ্দ শেষে যখন ঐ বৃটিশ বেনিয়া-সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্ত বাংলায় অকল্পনীয় দূর্ভিক্ষ- ছিয়াত্তর বাংলা সনের মানুষ্যসৃষ্ট মন্বন্তর সৃষ্টি করেছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের গণশক্তিকে দূর্বল এবং বিভক্ত করতে, তখনই সাম্রাজ্যলোভী বিলেতী পরাশক্তিই বিদায় ঘন্টা যেন বেজে উঠেছিল। Continue reading সংস্কৃতিই গণঐক্যের বলিষ্ঠ হাতিয়ার: কামাল লোহানী