মৃত্যুর এই উপত্যাকা আমাদের দেশ না :দীপংকর গৌতম

প্রকৃতপক্ষে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বলতে বেশ কিছুদিন ধরে দেশে সংখ্যালঘু শ্রেণীর উপর যে ধরনের বর্বরতা চালানো হচ্ছে তাকে ‘সাম্প্রদায়িকতা’ বললে বিষয়টা অনেক ভদ্রোচিত বাংলায় ব্যাখ্যা দেয়া হয় বলে আমার ধারণা। সাম্প্রদায়িকতার সঙ্গে সম্প্রদায় শব্দটি যুক্ত। সম্প্রদায়ের সঙ্গে কোনো না কোনো ধর্ম চিন্তার একটি গোষ্ঠী যুক্ত। আমাদের দেশে রামু থেকে শুরু করে পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে একদল সহিংস দুর্বৃত্ত যে নারকীয়তা চালাচ্ছে তাকে আমরা কোনোমতেই সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বলতে পারি না। কারণ কোন সম্প্রদায় সংগঠিতভাবে এই হামলার সঙ্গে নির্দিষ্টভাবে যুক্ত এ কথা বলার অবকাশ নেই।
রামুতে বা চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চলে হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উপর যে নারকীয়তা চলছে তার সঙ্গে কারা যুক্ত তা পরবর্তীতেই জানা গেছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এত পলেস্তরা পড়ে গেছে যে, এ বিষয় নিয়ে তেমন ঝামেলা বাড়াতে পারেনি কেউ। এর অপরাধীরা কে কোন দল করে পরে সবই সরকার এবং সরকারের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জানা। তারপরও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির কোন নজির আজ অবধি সরকার রাখতে পারেনি। দেশের সুশীল সমাজও এ ব্যাপার নিয়ে অতোটা তৎপর নয়। কারণ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর এতবেশি হামলা ইতিপূর্বে হয়েছে যে এর কোন বিচার না হওয়ার জন্য বিষয়টি গা সওয়া হয়ে গেছে। Continue reading মৃত্যুর এই উপত্যাকা আমাদের দেশ না :দীপংকর গৌতম

গ্রাম থেকে জেগে উঠো, শহর থেকে জেগে ওঠো

কথা ও সুর : মাহমুদ সেলিম ও অলক দাশগুপ্ত

গ্রাম থেকে জেগে উঠো, শহর থেকে জেগে ওঠো
মাঠ প্রান্তর থেকে, কারখানা কল থেকে
দৃপ্ত শপথে জেগে ওঠো
বিশ্বগ্রাসী দাবনটাকে বিশ্বমানব দাঁড়াও রুখে ॥

যারা ঈগলের হিংস্র ডানায় ঢাকে সুনীল আকাশ
যারা পারমাণবিক বিষে বিষাক্ত করছে বাতাস
যারা সন্ত্রাসে হত্যায় দেশে দেশে রক্ত ঝরায়
যারা নিরীহ শিশুর প্রাণ বোমার আঘাতে কেড়ে নেয়
রুখে দাও, এসো রুখে দাও
সেই বিশ্বগ্রাসী দানবটাকে বিশ্বমানব দাঁড়াও রুখে ॥

যারা কেড়ে নেয় বিশ্বের শিশুদের মুখ থেকে গ্রাস
যারা ধর্মের নামে হানে অস্ত্র-মৃত্যু-সন্ত্রাস
যারা জঙ্গীদমন ছলে দেশে দেশে গাড়ছে ঘাঁটি
যারা ইচ্ছে হলেই লোটে তেল, গ্যাস, দেশের মাটি
রুখে দাও, এসো রুখে দাও
সেই বিশ্বগ্রাসী দানবটাকে বিশ্বমানব দাঁড়াও রুখে ॥

এই নবান্নে এই হেমন্তে কাটা হবে ধান

কথা : সুকান্ত ভট্টাচার্য
সুর : শেখ লুতফর রহমান

এই নবান্নে এই হেমন্তে কাটা হবে ধান,
আবার শূন্য গোলায় ডাকবে ফসলের বান-
পোষ পার্বণে প্রাণ কোলাহলে
ভরবে গ্রামের নীরব শ্মশান।
তবুও এ হাতে কাস্তে তুলতে কান্না ঘনায়ঃ
হলকা হাওয়ায় বিগত স্মৃতিকে ভুলে থানা দায়;
গত হেমন্তে মরে গেছে ভাই ছেড়ে গেছে বোন
পথে প্রান্তরে খামারে মরেছে যত পরিজন
নিজের হাতে জমি ধান-বোনা
বৃথাই ধূলোতে ছড়িয়েছে সোনা,
কারোরই ঘরেতে ধান তোলবার
আসে নি শুভক্ষণ-
তোমার আমার ক্ষেত ফসলের অতি ঘনিষ্ঠ জন।
এবার নতুন জোরালো বাতাসে
জয়যাত্রার ধ্বনি ভেসে আসে,
পিছু মৃত্যুর ক্ষতির নির্বচন-
এই হেমন্তে ফসলেরা বলেঃ
কোথায় আপন জন ?
তারা কি কেবল লুকোনো থাকবে
অক্ষমতার গ্লানিকে ঢাকাবে।
প্রাণের বদলে যারা
প্রতিবাদ করেছে উচ্চারণ ?
এই নবান্নে প্রতারিতদের হবে না নিমন্ত্রণ ।

বল ভাই মাভৈঃ মাভৈঃ নবযুগ ঐ এল ঐ

কথা ও সুর : কাজী নজরুল ইসলাম

বল ভাই মাভৈঃ মাভৈঃ নবযুগ ঐ এল ঐ
এল ঐ রক্ত যুগান্তর রে
বল জয় সত্যের জয় আসে ভৈরব বরাভয়
শোন অভয় ঐ রথ ঘর ঘর রে ॥

রে বধির শোন পেতে কান
ওঠে ঐ কোন মহা গান
হাঁকছে বিষাণ ডাকছে ভগবান রে ।
জগতে লাগলো সাড়া জেগে ওঠ উঠে দাঁড়া
ভাঙ পাহারা মায়ার কারা ঘর রে।
যা আছে যাক না চুলায় নেমে পড় পথের ধূলায়
নিশান দোলায় ঐ প্রলয়ের ঝড় রে ॥

সে ঝড়ের ঝাপটা লেগে ভীমাবেগে উঠুক জেগে
পাষাণ ভেঙে প্রাণঝরা নির্ঝর রে।
ভুলেছি পর ও আপন ছিঁড়েছি ঘরের বাঁধন
স্বদেশ স্বজন স্বদেশ মোদের ঘর রে
যারা ভাই বদ্ধ কুয়ায় খেয়ে মার জীবন গোঁয়ায়
তাদের শোনাই প্রাণজাগা মন্তর রে ॥

বর্ষা ও বাঙালি :প্রদীপ ঘোষ

সমুদ্র আর পাহাড়ের, সবুজ সমতলের জমাট বাধা পলির বুকে কবে কোন কালে হেঁটেছিলো আদি মানবেরা। নাতিশীতোষ্ণ জলহাওয়ায় সবুজের বুকে ফলিয়েছিলো শস্যদানা। সেই সকল আদিমানবেরা একটু একটু করে প্রকৃতিকে সাজিয়েছে নিজের মত করে, গড়ে তুলেছিলো প্রকৃতিক সংস্কৃতি। বলছি সেই সকল মানুষদের কথা যারা এ জনপদের প্রকৃতিক সংস্কৃতি বিনির্মাণ করেছিলো। কালক্রমে একে একে বাইরে থেকে এলো নানা রক্তের ধারা। কখনো আদি অষ্ট্রিক, মঙ্গলীয় জনধারা, ইন্দো আর্য, পারস্য শক, পাঠান মোঘল সহ নানা জাতি। এই বিচিত্র মেলামেশার ফলে কালক্রমে বাঙ্গালির নিজস্ব এক গড়ন আমরা পেয়েছি। সেই সাথে পেয়েছি চাষাবাদের মত কৃষি সভ্যতা। ষড় ঋতুর অপার স্নেহে এই কৃষিই আমাদের দিয়েছে উর্বর এক সংস্কৃতি যার নাম বাঙ্গালি সংকৃতি। Continue reading বর্ষা ও বাঙালি :প্রদীপ ঘোষ