গণসংগীতের স্বরূপ-সন্ধান: যতীন সরকার

বাংলাদেশের গণসংগীত: বিষয় ও সুরবৈচিত্র্য তরুণ গবেষক সাইম রানার বইটির শীর্ষনামেই এর পরিচয় পরস্ফুিট হয়ে উঠেছে। এ দেশের মনন সাহিত্যে এই বাণীসাধকের অভ্যুদয়কে আমি সর্বান্তঃকরণে অভিনন্দন জানাই।

বইটির ‘মুখবন্ধ’র প্রথম অনুচ্ছেদেই তিনি লিখেছেন, “…অস্ত্রই একমাত্র প্রতিরোধের ভাষা হতে পারে না। যে-কোনো সৃজন, মনন, সাধন কিংবা তান্ত্রিক জ্ঞান দিয়েও প্রতিরোধ করা সম্ভব জগতের যত পঙ্কিলতা। তা গানে হোক, দেহভঙ্গিমায় কিংবা ইশারা-ইঙ্গিতে হোক, চিত্রে বা ফসলের আবাদে হোক—নিষ্পেষিত মানুষেরা যুগে যুগে, কালে কালে কখনোই ঠগেত বসে থাকেনি। প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের ব্যাপ্তি সংস্কৃতির ভিতর দিয়ে বিকশিত হয়েছে। বাংলা ভাষার আদি নিদর্শন ‘চর্যাপদ’ কিংবা লোকগীতি ‘ভাওয়াইয়া’, লোকনাট্য ‘গম্ভীরা’, তেমনি একেকটি জনপদের অধিকারের ভাষা। গণসংগীতও বিংশ শতাব্দীর অভিনব এক শিল্পদর্শন, যা সাম্রাজ্যবাদ, ফ্যাসিবাদ শোষকের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধ জাগরণের প্রতিষ্ঠিত আঙ্গিক হিসেবে মূল্যায়নযোগ্য।” Continue reading গণসংগীতের স্বরূপ-সন্ধান: যতীন সরকার

কথা : প্রবীর সরদার
সুর : ফারুক ফয়সাল
গোধূলীর সাথে সন্ধ্যা যে যায়
আবার সন্ধ্যা আসে
তপন রতন ভেসে ভেসে ওঠে
বেদনার প্রতিভাসে।।

কান্না হয়ে থামতে না চায়
সৈয়দ বুলু নীরবে তাকায়
মুখের হাসিটি কেড়ে নিয়ে হায়
শত্রুরা আজও হাসে।।

প্রতিবাদী সূর্য্যটা আলোক ছড়ায়
রামকৃষ্ণের চোখে রক্ত গড়ায়
শাহ্ আলমেরা ঘুমিয়ে রয়েছে
তোমার আমার পাশে

চিৎকার করে ইলিয়াস ডাকে
নূর ইসলাম মরে পড়ে থাকে
বাবলু রায়ের বুক ভেসে যায়
নিষ্ঠুর পরিহাসে।।

নির্বাচন, সংখ্যালঘু নির্যাতন ও নৌকার জয় :যতীন সরকার

‘দশ নম্বর বিপদ সংকেত’ জানিয়ে দিয়েছিলেনে প্রবীণ রাজনৈতিক আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, এ বছরের জানুয়ারির ৫ তারিখে জাতীয় সংসদের দশম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই। মূলত নির্বাচনে বিজয়ী দলটির উদ্দেশেই ছিল তাঁর সতর্কবার্তা- ‘নির্বাচন তরীটি কোনোমতে ঠেলেঠুলে তীরে নিয়ে আসতে পারায় আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট ও তার নেত্রী শেখ হাসিনা যেন না ভাবেন, তাঁরা বিপদ ও সংকটমুক্ত হয়েছেন। সামনে আরো বড় বিপদ ও বড় লড়াই অপেক্ষা করছে।’ (‘কালের কণ্ঠ’ ৭ জানুয়ারি, ২০১৪)

লণ্ডন থেকে গাফ্ফার চৌধুরী তাঁর লেখাটি পাঠিয়েছিলেন নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরদিনই। সেই দিন থেকেই ‘বাংলাদেশে আরো বড় বিপদ’-এর সূচনা ঘটে গেছে। সেই দিনই ‘সংখ্যালঘুদের দুই শতাধিক বাড়ি ভাঙচুর, আগুন, লুট। তিন স্থানে হামলায় আহত নারীসহ ৪০’ এবং সেই দিনেরই প্রতিবেদন- ‘৪৫ মিনিটে গুঁড়ো হয়ে গেছে শত বছরের বিশ্বাস’। যশোরের অভয়নগর যেন হয়ে ওঠে হিন্দুদের ওপর হামলাকারীদের ‘অভয়াশ্রম’। এ রকমই অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে দিনাজপুরের সদর উপজেলা, সীতাকুণ্ড, বগুড়া, মাগুরা, সাতক্ষীরা ও সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ। Continue reading নির্বাচন, সংখ্যালঘু নির্যাতন ও নৌকার জয় :যতীন সরকার

ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ প্রসঙ্গে: যতীন সরকার

 ধর্মভিত্তিক রাজনীতি কি নিষিদ্ধ করে দেওয়া উচিত? অন্তত বাংলাদেশে?

এ প্রশ্নের উত্তরে আমি পুরোপুরি নির্দ্বিধায় ও নিঃসংকোচে বলব- ‘হ্যাঁ’। আবার পরক্ষণেই বলব- ‘না’। এই ‘না’টিও ‘হ্যাঁ-এর মতোই একই রকম দ্বিধাহীন চিত্তে নিঃসংকোচেই বলব। কেন এ রকম দুই বিপরীত কথা এক নিঃশ্বাসে বলি ও বলে ফেলতে পারি, তার ব্যাখ্যা প্রদানেও আমার কোনো দ্বিধা বা সংকোচ নেই।

ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্ররূপে পাকিস্তান নামক যে অপরাষ্ট্রটির অধীন হয়েছিলাম আমরা, তার হাত থেকে মুক্তি লাভের জন্যই আমাদের অপরিমেয় প্রাণমান ও ধন উৎসর্গ করতে হয়েছিল। এ রকম সংগ্রাম করতে গিয়েই ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র সম্পর্কে আমরা পরিপূর্ণ মোহমুক্ত হয়ে উঠেছিলাম। তাই আমাদের সংগ্রামটি পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অন্য একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম মাত্র ছিল না, সেটি ছিল জাতি হিসেবে আমাদের আত্মপ্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। সেটি যেমন ‘স্বাধীনতার সংগ্রাম’ ছিল, তেমনই ছিল ‘মুক্তির সংগ্রাম’। Continue reading ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ প্রসঙ্গে: যতীন সরকার

অধ্যাপক যতীন সরকারের সাক্ষাৎকার : মোজাফফর হোসেন

প্রবন্ধ ও গবেষণায় সামগ্রিক অবদানের জন্য ২০০৭ সনের বাংলা একাডেমী পুরষ্কারপ্রাপ্ত লেখক যতীন সরকারের জন্ম নেত্রকোনা জেলার চন্দ্রপাড়া গ্রামে ১৩৪৩ বঙ্গাব্দে। লেখকের প্রথম বই ‘সাহিত্যের কাছে প্রত্যাশা’। ২০০৫ সালে তাঁর ‘পাকিসত্মানের জন্মমৃত্যু-দর্শন’-এর জন্য তিনি ‘প্রথম আলো’ পুরষ্কার পান। চল্লিশ বছরেরও অধিক কাল অধ্যাপনার সাথে যুক্ত থাকার পর বর্তামানে তিনি নেত্রকোনায় অবসর জীবন-যাপন করছেন।

মোজাফফর : স্যার, এই সময়ে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে কেমন বোধ করছেন ?

যতীন সরকার : খুব যে ভালো বোধ করছি তা না, কিন্তু আমি তো এরকমই…। Continue reading অধ্যাপক যতীন সরকারের সাক্ষাৎকার : মোজাফফর হোসেন