স্বাধীনতা পুরস্কারজয়ী বিশিষ্ট শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী-এর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। এক শোক বার্তায় উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি কামাল লোহানী ও সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সরদার বলেন, কাইয়ুম চৌধুরীর মৃত্যুতে বাংলাদেশের চিত্রকলা জগতে অপূরণীয় ক্ষতি হলো। সারাজীবন ধরে চিত্রকলার বিকাশ, প্রচার ও প্রসারে শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী অসামান্য অবদান রেখেছেন। তাঁর অনবদ্য অঙ্কনশৈলীর মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের চিত্রকলা জগতে শিল্পাচার্য্য জয়নুল আবেদীন, পটুয়া কামরুল হাসান এবং শফিউদ্দিন আহমেদের পরই সবচেয়ে জনপ্রিয় চিত্রশিল্পী হিসেবে নিজের নাম প্রতিষ্ঠা করেন। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলার চিত্রকলায় একের পর এক রতœ তৈরি করেছেন শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী। তাঁর দেখানো পথ ধরেই নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা চিত্রকলার বিকাশে ভূমিকা রাখবেন বলে আশা প্রকাশ করেন উদীচীর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
১৯৩৪ সালের ০৯ মার্চ নোয়াখালীর একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নেয়া কাইয়ুম চৌধুরী ছোটবেলা থেকেই চিত্রকলার প্রতি আকৃষ্ট হন। চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নড়াইল, সন্দ্বীপ, ফেনী, ফরিদপুর এবং ময়মনসিংহে শৈশব কাটানো কাইয়ুম চৌধুরী বাংলার অপার সবুজ প্রকৃতির প্রেমে পড়েন। নড়াইলে থাকার সময় চিত্রা নদীর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তিনি বেশ কিছু চিত্রকর্ম তৈরি করেন। চিত্রাঙ্কনের পাশাপাশি শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী ১৯৫৭ সালে ঢাকা আর্ট কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের স্বীকৃতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানটি থেকে ১৯৯৪ সালে অবসর নিলেও তিনি ২০০২ সাল পর্যন্ত সেখানে কর্মরত ছিলেন। চিত্রকলায় অসামান্য অবদানের জন্য শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদকসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হন। গত ৩০ নভেম্বর ঢাকায় আয়োজিত বেঙ্গল উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত উৎসবে বক্তব্য রাখার সময় হঠাৎ মঞ্চে পড়ে যাওয়ার পর হাসপাতালে নিয়ে গেলে মারা যান গুণী শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী।
স্বাধীনতা পুরস্কারজয়ী বিশিষ্ট শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী-এর মৃত্যুতে তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন উদীচী’র কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।