রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক, লালন গবেষক এবং প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক ড. এ কে এম শফিউল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। শফিউল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে গত ১৯ নভেম্বর বিকাল সাড়ে চারটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে এ দাবি জানান উদীচী নেতৃবৃন্দ। উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি কামাল লোহানীর সভাপতিত্বে সমাবেশে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি আশরাফুজ্জামান সেলিম, অধ্যাপক এ এন রাশেদা, সহ-সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন, উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের সাধারণ সম্পাদক ইকবালুল হক খান ইকবাল বক্তব্য রাখেন। এছাড়া, সমমনা বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দও এতে বক্তব্য রাখেন। তাদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হাসান তারেক, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুম, গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির নেতা হাসান তারেক চৌধুরী সোহেল, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক সাঈদা সুলতানা এ্যানি এবং কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান সাগর।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, একজন মুক্তমনা, প্রগতিশীল চিন্তা চেতনার মানুষ অধ্যাপক শফিউল ইসলামকে হত্যার মাধ্যমে দেশে মুক্ত বুদ্ধির চিন্তার প্রসারকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে। তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসাম্প্রদায়িক, মৌলবাদবিরোধী চেতনার প্রসার এবং তাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার মতো মহৎ কাজে নিয়োজিত ছিলেন শফিউল ইসলাম। ছাত্রজীবন থেকে প্রগতিশীল রাজনীতির সাথে জড়িত শফিউল ইসলাম একজন লালন প্রেমী এবং গবেষকও ছিলেন। তাঁর হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত তা প্রমাণিত না হলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে নানা ধরনের বিভ্রান্তিকর সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে এ হত্যাকাণ্ডের তদন্তকাজকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্র চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক-এর একটি পেজে আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ-২ নামের একটি সংগঠনের শফিউল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলেও প্রকৃত অর্থেই ভূঁইফোড় এ সংগঠনটি হত্যা করেছে, নাকি অন্য কোন গোষ্ঠী এ কাজ করে অন্যের উপর দায় চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে- তা খতিয়ে দেখার জন্যও তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং তদন্তকারী সংস্থাগুলোর প্রতি আহবান জানান। প্রতিবাদ সমাবেশে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক এবং প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক ড. এ কে এম শফিউল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের সাথে যে বা যারাই জড়িত থাকুক না কেন, অবিলম্বে তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিও জানানো হয়।