উদীচী মানিকগঞ্জ জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মামুন জানিয়েছেন ওইদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে উদীচী কার্যালয়ে পুলিশের উপস্থিতির খবর পেয়ে তিনি নিজে এবং প্রচার সম্পাদক এম আর লিটন সেখানে ছুটে যান। ওই সময় পুলিশ কোনো কারণ উল্লেখ না করে অপেশাদার ও মারমুখী কায়দায় কার্যালয়ের তালা খোলার নির্দেশ দেন। নেতৃবৃন্দ কারণ জানতে চাইলে কোনো কারণ না জানিয়ে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও হুমকী ধামকি দিতে থাকেন কর্তব্যরত অফিসার। এই সময় দ্রুত কার্যালয়ের তালা খোলা নির্দেশ দিয়ে উদীচী কার্যালয়ে ভীতিকর পরিস্থিতিও তৈরি করেন কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তা। সাধারণ সম্পাদক মামুন তখন প্রচার সম্পাদক এম আর লিটনকে চাবি নিয়ে আসতে বলেন। লিটন এসে তালা খুলে দিলে পুলিশ তল্লাশি চালায়। তল্লাশি চলাকালে নিরাপত্তার স্বার্থে উদীচী নেতৃবৃন্দ ঘটনাটি ভিডিও করতে গেলে তাদের কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নেয় পুরিশ এবং আরো রুঢ় ও অকথ্য ভাষা ব্যবহার করা হয় পুরিশের তরফ থেকে। পরে তল্লাশি করে কিছু না পেয়ে নেতৃবৃন্দকে অহেতুক জেরা করতে থাকে। খবর পেয়ে এক পর্যায়ে সেখানে গিয়ে পৌঁছান স্থানীয় ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি এড. দীপক কুমার ঘোষ। তিনি আসলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয় এবং পুলিশ সেখান থেকে চলে যায়। কিন্তু কেন এই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানো হয়েছে সে ব্যপারে কোনো ব্যখ্যা দেয়নি পুলিশ।
মানিকগঞ্জ উদীচীতে পুলিশের আকস্মিক এ অভিযান, ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি এবং নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ঘটনায় ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাম করেছেন স্থানীয় সাংষ্কৃতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এই ঘটনায় উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ড. সফিউদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপনও বিবৃতি দিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানান। এক যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা বলেন- পুলিশ তার কর্তব্য পালনের জন্য তল্লাশি চালাতেই পারে, সেই কাজে বাধা দেয়ার কোন কারণ নেই। কিন্তু উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কার্যালয় জেনেও সেখানে তল্লাশির নামে উদীচীর জেলা নেতৃবৃন্দের সাথে অশোভন ও অসৌজন্যমূলক আচরণ মেনে নেয়া যায় না। দিনে দিনে পুলিশ বাহিনীর কতিপয় সদস্যের ঔদ্ধত্বপূর্ণ আচরণ বেড়েই চলেছে। সমাজে ও রাষ্ট্রে অপরাধীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হলেও রাষ্ট্রের নাগরিকদের সাথে দুর্ব্যবহার ও বেআইনি আচরণের মাত্রা বেড়ে চলেচে। এতে চারদিকে ভীতির পরিবেশ তৈরি হচ্চে। ফলে পুলিশ বাহিনীর উপর আস্থা হারাচ্ছে সাধারন মানুষ। এ বাহিনীটি িদিনদিন অজনপ্রিয় হয়ে পড়েছে। নেতৃবৃন্দ দোষী পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান।
উদীচী বার্তা/ আর এম