জাতীয় স্মৃতিসৌধের স্থপতি, স্বাধীনতা সংগ্রামী মাইনুল হোসেন-এর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। এক শোক বার্তায় উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি কামাল লোহানী ও সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সরদার বলেন, বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম প্রতীক, মহান মুক্তিযুদ্ধের সাতটি গৌরবময় অধ্যায় যার মাধ্যমে অসাধারণভাবে ফুটে উঠেছে সেই স্মৃতিসৌধের নকশা এঁকে বাঙালির মানসপটে চিরস্থায়ী আসন গড়ে নিয়েছেন মাইনুল হোসেন।
১৯৭৮ সালে সরকার যখন মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ধরে রাখার উদ্দেশ্যে সাভারে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়, তখন নকশা আহবান করা হলে মোট ৫৭টি নকশা জমা পড়ে। এর মধ্যে মাইনুল হোসেন-এর আঁকা নকশাটিই চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয় এবং সে অনুযায়ী নির্মিত হয় জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এরপর থেকেই দেড়শ’ ফুট উঁচু ওই মিনারটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মূর্ত প্রতীক হিসেবে সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে।
১৯৫৪ সালে জন্ম নেয়া মাইনুল হোসেন যখন স্মৃতিসৌধের নকশাটি জমা দেন, তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৬ বছর। এত অল্প বয়সে এমন অসাধারণ নকশা আঁকার মাধ্যমে তিনি তাঁর অনন্য প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশ একজন অনন্যসাধারণ প্রতিভাকে হারালো বলে শোক বার্তায় মন্তব্য করেন কামাল লোহানী ও প্রবীর সরদার। নানা ধরণের জটিলতায় ভুগে গত ০৯ নভেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন মাইনুল হোসেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই গত ১০ নভেম্বর দুপুরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
জাতীয় স্মৃতিসৌধের স্থপতি, স্বাধীনতা সংগ্রামী মাইনুল হোসেন-এর মৃত্যুতে তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন উদীচী’র কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।